>কলকাতা ভ্রমণ< সিটি অব জয় কলকাতা > (ষষ্ঠ পর্ব)

কলকাতা বা কোলকাতা। পূর্বনাম কলিকাতা বা ক্যালকাটা। ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী, গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যকেন্দ্র এবং তৃতীয় বৃহত্তম শহর কলকাতা। হুগলী নদীর পূর্ব তীরে অবস্থিত এই শহরের পৌরএলাকার জনসংখ্যা ৫০ লক্ষের কিছু বেশি। তবে কলকাতা ও তার পার্শ্ববর্তী জেলাগুলোর অংশবিশেষ নিয়ে গঠিত বৃহত্তর কলকাতার জনসংখ্যা ১ কোটি ৪০ লক্ষের কাছাকাছি। এই জনসংখ্যার বিচারে কলকাতা ভারতের তৃতীয় বৃহত্তম শহর ও দ্বিতীয় বৃহত্তম মহানগরীয় অঞ্চল এবং বিশ্বের অষ্টম বৃহত্তম মহানগর অঞ্চল।
১৭৭২ সালে মুর্শিদাবাদ শহর থেকে বাংলার রাজধানী কলকাতায় স্থানান্তরিত করা হয়। ১৯১১ সাল পর্যন্ত কলকাতা শুধুমাত্র বাংলারই নয়, বরং সমগ্র ব্রিটিশ ভারতের রাজধানী ছিল। ১৯২৩ সালে ক্যালকাটা মিউনিসিপ্যাল অ্যাক্টের অধীনে কলকাতার স্থানীয় স্বায়ত্তশাসন কর্তৃপক্ষ ‘কলকাতা পৌরসংস্থা’ স্থাপিত হয়।
১৯৪৭ সালে ভারত বিভাগের পর কলকাতা নবগঠিত পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের রাজধানী ঘোষিত হয়। এই সময় কলকাতা ছিল আধুনিক ভারতের শিক্ষা, বিজ্ঞান, শিল্প, সংস্কৃতি ও রাজনীতির এক তীর্থস্থান।
কলকাতা শহরের প্রসিদ্ধি এই শহরের বৈপ্লবিক আন্দোলন ও সুদীর্ঘ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের জন্য। ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন ও পরবর্তীকালে বামপন্থী গণআন্দোলনগুলোতে এই শহর এক বিশেষ ভূমিকা গ্রহণ করেছিল।
কলকাতা শহরে বিভিন্ন ভাষা, জাতি ও ধর্মাবলম্বী মানুষদের শান্তিপূর্ণ ও সৌহার্দ্যময় সহাবস্থানের জন্য এই শহরকে আনন্দ নগরী বা সিটি অব জয় নামেও অভিহিত করা হয়।
উইকিপিডিয়ার তথ্যানুযায়ী বাঙালিরা কলকাতার সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠী। মারোয়াড়ি ও বিহারি সম্প্রদায় শহরের উল্লেখযোগ্য জাতিগত সংখ্যালঘু সম্প্রদায় (২০ শতাংশ)। এছাড়া কলকাতা প্রবাসী চীনা, তামিল, নেপালি, ওড়িয়া, তেলেগু, অসমীয়া, গুজরাটি, অ্যাংলো-ইন্ডিয়ান, আর্মেনিয়ান, তিব্বতি, মহারাষ্ট্রীয়, পাঞ্জাবি, পারসি প্রভৃতি জাতিগত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বাসভূমি।
কলকাতার প্রধান ভাষা হল বাংলা ও ইংরেজি। এছাড়া হিন্দি, উর্দু, ওড়িয়া ও ভোজপুরি ভাষাও শহরের একাংশের বাসিন্দাদের দ্বারা কথিত হয়ে থাকে।
জনগণনা অনুসারে কলকাতার জনসংখ্যার ৭৭.৬৮ শতাংশ হিন্দু, ২০.২৭ শতাংশ মুসলিম, ০.৮৮ শতাংশ খ্রিষ্টান এবং ০.৪৬ শতাংশ জৈন। অবশিষ্ট শিখ, বৌদ্ধ, ইহুদি ও জরথুস্ট্রীয়(অগ্নিপূজারী) সম্প্রদায়ের জনসংখ্যা ০.৭১ শতাংশ।
কলকাতার দর্শনীয় স্থান :— টিপু সুলতানের মসজিদ, নাখোদা মসজিদ, আর্মেনিয়ান চার্চ, ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল, শহীদ মিনার, ইন্ডিয়ান মিউজিয়াম, ভাসমান জাদুঘর, ফোর্ট উইলিয়াম, রাজভবন, রবীন্দ্র সরোবর, জুওলজিক্যাল গার্ডেন, জোড়া সাঁকোর ঠাকুরবাড়ি, রবীন্দ্র সেতু, বিদ্যাসাগর সেতু, বোটানিক্যাল গার্ডেন, বিধান শিশু উদ্যান, নিক্কো পার্ক, বড় বাজার, পোস্টাল মিউজিয়াম, জাতীয় গ্রন্থাগার, নেতাজী মিউজিয়াম, এমপি বিড়লা তারামণ্ডল, কারবালা মসজিদ প্রভৃতি আরও কত কী!
কলকাতা মহানগরী তার সমৃদ্ধ ঐতিহ্যের জন্য আজও বিশ্ববাসীর চোখে মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত। চলবে…….
>>>বিস্তারিত জানতে প্রথম মন্তব্যের ঘরে থাকা লিংকে ক্লিক করুন।

About the Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

You may also like these